ফ্লোরিন (F) পর্যায় সারণিতে সর্বাপেক্ষা তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল। তড়িৎ ঋণাত্মকতা হলো একটি পরমাণুর রাসায়নিক বন্ধনে ইলেকট্রন আকর্ষণ করার ক্ষমতা। পলিং স্কেলে ফ্লোরিনের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান ৪.০, যা সব মৌলের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর কারণ নিম্নরূপ:

1. পরমাণুর আকার ছোট: ফ্লোরিনের পরমাণু খুবই ক্ষুদ্র। এর কারণে নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধান ইলেকট্রনের উপর বেশি কার্যকরভাবে কাজ করে, যা ইলেকট্রন আকর্ষণের ক্ষমতা বাড়ায়।
2. ইলেকট্রন বিন্যাস: ফ্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস 1s² 2s² 2p⁵। এর বাইরের শক্তিস্তরে (2p অরবিটালে) ৭টি ইলেকট্রন রয়েছে। এটি একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে স্থিতিশীল অষ্টক (octet) গঠন করতে পারে, ফলে এটি ইলেকট্রনের প্রতি তীব্র আকর্ষণ প্রদর্শন করে।
3. পর্যায় সারণির অবস্থান: ফ্লোরিন পর্যায় সারণির ১৭তম গ্রুপে (হ্যালোজেন) এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে অবস্থিত। একই পর্যায়ে ডান দিকে যাওয়ার সাথে তড়িৎ ঋণাত্মকতা বৃদ্ধি পায়, কারণ নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা বাড়ে এবং পরমাণুর আকার ছোট হয়।
4. রাসায়নিক আচরণ: ফ্লোরিন অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। এটি প্রায় সকল মৌলের সাথে সহজেই যৌগ গঠন করে, যেমন- HF, NaF। এর কারণ এটির উচ্চ তড়িৎ ঋণাত্মকতা, যা অন্য পরমাণু থেকে ইলেকট্রন আকর্ষণে সহায়তা করে।

উপসংহার: ফ্লোরিনের ক্ষুদ্র পরমাণু আকার, উচ্চ নিউক্লিয়ার আধান এবং স্থিতিশীল অষ্টক গঠনের প্রবণতার কারণে এটি সর্বাপেক্ষা তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল। এটি রাসায়নিক বন্ধনে ইলেকট্রন আকর্ষণে অত্যন্ত কার্যকর।